রজার্স যখন কানাডার টেলিকম জায়ান্ট শ কেনার চেষ্টার কথা বলেছিল, তখন দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামীণ অঞ্চলে নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ১০০ কোটি ডলার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিল কোম্পানিটি।
সাস্কেচুয়ানের গ্রামাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকার ইন্টারনেট ও সেলফোন নেটওয়ার্কের অবস্থা শোচনীয়। এই গ্রামাঞ্চলেরই বাসিন্দা রোন্ডা ওয়েরবিকি। ভালো ইন্টারনেট ও সেলফোন সেবাপ্রাপ্তি তার আকাক্সক্ষা। তবে এজন্য বিকল্প অপারেটর চার তিনি।
ওয়েরবিকি যেমনটা বলছিলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই এখানে একাধিক কোম্পানি আসুক, যাতে করে কিছুটা প্রতিযোগিতার পরিবেশ থাকে।
ওয়েরবিকির জন্য যোগাযোগটা কেবল আরামদায়ক বিষয় নয়। তার চেয়েও বেশি কিছু। তিনি যেখানে থাকেন সেই ডেনার বিচ প্রিন্স আলবার্ট থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে সাস্কেচুয়ান-ম্যানিটোবা সীমান্তের ঠিক ওপরে। হাইওয়ে ১০৬ এ তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কারণ সেখানে কোনো সেলফোন নেটওয়ার্ক নেই।
২০১৮ সালে সাস্কেচুয়ানে স্যান্ডি বে থেকে প্রিন্স আলবার্টের দিকে যাচ্ছিলেন কাইলি মোরিন। পথিমধ্যে তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং বরফ খ-ের সঙ্গে ধাক্কা খান। মোরিন বলছিলেন, গাড়ি থামার পর নিজেকে পরীক্ষা করে দেখলাম ঠিকই আছি। কিন্তু আমার মনে উঁকি দিচ্ছিল খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কা। দুর্ঘটনার মিনিট দশেক পর এক দম্পতি এসে তাকে উদ্ধার করেছিলেন সেদিন।
শেষ পর্যন্ত মোরিন ও ওয়েরবিকি দুজনের ভাগ্যই সুপ্রসন্ন ছিল বলতে হবে। তবে তাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে যোগাযোগ যে কতটা জরুরি সেটা উঠে এসেছে। ব্যবসায় কৌশল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ব্রুস অ্যান্ডারসন বলেন, উন্নত ইন্টারনেট ও সেলফোন নেটওয়ার্ক যতটা না সেবামূলক তার চেয়েও বেশি কৌশলগত। রজার্স সম্ভবত কানাডিয়ান রেডিও-টেলিভিশন অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন্স কমিশনকে (সিআরটিসি) এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, প্রতিযোগিতা স্বল্পতা দেশের জন্য খারাপ কিছু নয়।
রজার্স-শ চুক্তির ফলে দেশে মেজর সেলফোন ও ইন্টারনেট সেবাদাতার সংখ্যা চারটি থেকে তিনটিতে নেমে আসবে। অ্যান্ডারসন বলছিলেন, স্বল্প প্রতিযোগিতা ভোক্তাদের জন্য ভালো কিছু নয়। গ্রোসারি স্টোর ও রিটেইল গ্যাসের ক্ষেত্রে আমরা সেটা দেখেছি।
এমনিতেই ইন্টারেনট ও সেলফোন সেবার বিনিময়ে অন্যান্য দেশের তুলনায় কানাডিয়ানদের বেশি মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যান্ডারসনের বিশ্বাস, রজার্সের নেটওয়ার্ক যাতে অন্যরাও ব্যবহার করতে পারে কোম্পানিটিকে সে ব্যাপারে বাধ্য করতে পারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান। এতে কিছুটা হলেও বাজারে বৈচিত্র আসবে।
শকে ক্রয়ের আগে ফেডারেল সরকারকে অবশ্যই চুক্তিটি অনুমোদন করতে হবে। তবে এ বছরের শেষ দিক ছাড়া সেটা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না অ্যান্ডারসন।